মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত সব অর্জন হৃদয়ের গভীরে ধারণ করে প্রবাসে বেড়ে ওঠা পরবর্তী প্রজন্মকে একই আদর্শে গড়ে তোলার প্রত্যয় ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল নিয়ে থাকে প্রতিনিয়ত। মাতৃভূমি থেকে দূরে থাকলেও বিজয়ের এই বিশেষ দিনের তাৎপর্য যাতে ছাত্রছাত্রীদের মনে চিরস্থায়ী রূপ নেয় তা নিশ্চিত করতেই প্রতিবছরের মত এবারও আয়োজন করা হয়েছিল বিজয় উৎসব এবং বর্ষ সমাপনী সনদ বিতরণ।

গত পনেরোই ডিসেম্বর স্কুল মিলনায়তনে বেলা এগারোটায় বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানান বাংলা স্কুল সাধারন সম্পাদক কাজী আশফাক রহমান। সমবেত কন্ঠে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে এই বিজয় উৎসব আয়োজনের সূচনা ঘটে। এর পরপরই স্কুলের ছেলেমেয়েরা একটি আকর্ষণীয় পরিবেশনা উপহার দিয়ে সবাইকে বিমোহিত করে। একক আবৃত্তি ও একক সংগীত এবং বৃন্দ আবৃত্তি ও দলগত সংগীতের প্রতিটি শাখায় স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা তাদের নামের প্রতি পূর্ণ সুবিচার করতে সক্ষম হয়। একক আবৃত্তিতে অংশ নেয় শোভা, এথিনা, স্বপ্নীল, ওয়াফি, তাওহিদ, রেইনর, দৃপ্ত, রুশদা,এথিনা, তাহিয়া ও এলভিরা। একক সংগীতের ডালি আসে নাশওয়া, ঋষিকা, রাসমিয়া, সুবা এবং এলভিরা। স্কুলের ক্ষুদে ছাত্রী জেইনা দাদা স্কুলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নাজমুল আহসান খান এর সাথে একটি ভক্তিমূলক গান গেয়ে সবাইকে আবেগতাড়িত করে তোলে। ঈশপের একটি শিক্ষামূলক গল্প বাংলা বই থেকে পড়ে সবাইকে চমৎকৃত করে নুরিন।
দ্বিতীয় পর্বে স্কুলের নিজস্ব শিল্পীরা বিজয় দিবসের মূল ভাবকে প্রতিপাদ্য করে গান ও কবিতা পাঠ করেন। সংগীত পরিবেশন স্কুলের সংগীত শিক্ষক রুমানা ফেরদৌস লনি। কবিতা পড়ে শোনান বাংলা স্কুলের শিক্ষক নাসরিন মোফাজ্জল এবং রুমানা সিদ্দিকী।

তৃতীয় ও শেষ পর্বে বর্ষ সমাপনী সনদ বিতরণ করা হয়। সভাপতি আবদুল জলিল ছাত্রছাত্রীদের হাতে সনদ তুলে দেন। এই পর্বে গত বছর এবং এবছরের মর্যাদাপূর্ণ মিনিস্টারস এওয়ার্ড তুলে দেয়া হয় যথাক্রমে আলিশা কাজী রহমান এবং এলভিরা সাহার হাতে। এই পর্বটি পরিচালনা করেন অধ্যক্ষ রোকেয়া আহমেদ। সহায়তা করেন শ্রেণি শিক্ষক রুমানা সিদ্দিকী, নাসরিন মোফাজ্জল এবং মাহসিনা জেলিন।

পুরো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিজয় সাহা এবং সংগীত শিক্ষক রুমানা ফেরদৌস লনি। সঞ্চালনায় ছিলেন রুমানা সিদ্দিকী এবং স্কুলের অধ্যক্ষ রোকেয়া আহমেদ। তবলায় সংগত করেন বিজয় সাহা এবং দোতারা ও বাঁশিতে ছিলেন আহমেদ তারিক। শব্দ নিয়ন্ত্রণ এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধের ত্রিমাত্রিক ব্যঞ্জনায় নির্মিত মঞ্চের মূল পরিকল্পনা ও নির্মানে ছিলেন সহসভাপতি মাসুদ মিথুন। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মসিউল আজম খান স্বপন এবং রুমানা খান মোনা।

বেলা আড়াইটায় ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সবাইকে ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুলে আমন্ত্রণ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন সভাপতি আবদুল জলিল

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল প্রতি রবিবার সকাল দশটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব বাংলা ভাষাভাষীর জন্য উন্মুক্ত থাকে।